Breaking News
recent

কমলার পুষ্টিগুণ

কমলার পুষ্টিগুণ



জনপ্রিয় এবং সহজলভ্য একটি ফল কমলা। এটি প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায় বলে এটি আর এখন বিদেশি কোনো ফল নয়। জনপ্রিয় এই ফলটির পুষ্টিগুণ কী, আমরা সবাই হয়তো জানি না।
কমলার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ হলো :
১। ১০০ গ্রাম কমলাতে আছে ভিটামিন বি ০.৮ মিলিগ্রাম, সি ৪৯ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৩ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৩০০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৩ মিলিগ্রাম।

২। দৈনিক যতটুকু ভিটামিন ‘সি’ প্রয়োজন তার প্রায় সবটাই একটি কমলা থেকে সরবরাহ হতে পারে।
৩। কমলায় আছে শক্তি সরবরাহকারী চর্বিমুক্ত ৮০ ক্যালরি, যা শক্তির ধাপগুলোর জন্য জ্বালানি হিসেবে কাজ করে।
৪। কমলায় আছে প্রচুর ভিটামিন সি, যা ক্যান্সার প্রতিরোধক, স্বাস্থ্যকর, রক্ত তৈরিকারক এবং ক্ষত আরোগ্যকারী হিসেবে খুবই উপযোগী।
৫। কমলা বি ভিটামিন ফোলেটের খুব ভালো উত্স, যা জন্মগত ত্রুটি এবং হৃদরোগের জন্য ভালো কাজ করে।
৬। প্রতিদিনকার প্রয়োজনীয় পটাসিয়ামের ৭ ভাগ পূরণ করা সম্ভব কমলা দিয়ে, যা শরীরের তরলের ভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রয়োজন।
৭। কমলাতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেল ড্যামেজ করে। ফলে ত্বকে সজীবতা বজায় থাকে।
৮। কমলায় উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিভিন্ন ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৯। কমলাতে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন সেল ড্যামেজ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
১০। কমলার ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম থাকায় ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
১১। কমলা পটাসিয়াম ইকেট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখে এবং কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম ভালো রাখতে সহায়তা করে।
১২। কমলাতে উপস্থিত লিমিনয়েড মুখ, ত্বক, ফুসফুস, পাকস্থলীকে কোমল রাখে এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
১৩। কমলা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় ওজন কমাতেও সহায়তা করে।

পাঠ /পদ্ধতি - ২
কমলালেবু কম-বেশি সবাই খেতে পছন্দ করেন। স্বাস্থ্যের উপকারিতা দিক থেকেও এটি গুণ রয়েছে। এই ফলটিতে রয়েছে ভিটামিন সি। আমরা খাওয়ার সময় কমলালেবুর খোসাটি সমসময়ই ফেলে দেই। কিন্তু এটা কোনো ফেলনা জিনিস নয়। খোসা হলেও এর রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার। দেখে নেয়া যাক কমলার খোসা কি কি কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।
* অ্যাজমা ও কাশির সমস্যায় : 
কমলার খোসার গুঁড়ো কাশির সমস্যা দূর করে। এছাড়াও শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ও অ্যাজমা উপশমে এটি কাজে লাগে। এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কমলার খোসায় তৈরি চা নিয়মিত পান করুন।
* কফ ও পিত্তের সমস্যায়: 
কফ ও পিত্ত সমস্যার সমাধানে কমলার খোসা উপকারী। কমলার খোসা পাতলা করে ছিলে গ্রেটারে ঘষে নিন। খোসার কুচিগুলো রঙ চা তৈরির সময়েই ঢেলে দিন। এর সাথে অল্প পরিমাণে আদা দিতে পারেন। এবার পানি ফুটিয়ে আদা ও কমলার গন্ধ ছড়ালেই চায়ের মতো পান করুন। চাইলে মধুও মেশাতে পারেন।
* অ্যাসিডিটি দূর করতে: 
কমলার খোসার তেলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি রয়েছে যা পেটের অ্যাসিডিটি দূরীকরণে সহায়তা করে। এছাড়াও এতে ডি-লিমোনেন নামের একটি উপাদান আছে যা অন্ত্র ও লিভার ফাংশনকে স্বাভাবিক রাখে। আর এর তেল পানিতে দু’ফোঁটা মিশিয়ে পান করলে অ্যাসিডির সমস্যা একেবারেই চলে যাবে।
* ওজন কমাতে: 
উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরলের সমস্যা ও ওজন কমানোর জন্য কমলার খোসা অনেক বেশি কার্যকরী। কারণ এতে ট্রাইগ্লিসারাইড দ্রবীভূত থাকে যেটি সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করে।
* ত্বকের কালো দাগ দূর করার উপায়: 
১ টেবিল চামচ টক দই, ১/২ চামচ মধু, ১ চা চামচ কমলার খোসা বাটা এক সঙ্গে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ত্বকে লাগান। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে প্যাকটিতে এক চা চামচ অলিভ ওয়েল বা নারিকেল তেল মিশিয়ে নিতে পারেন।
* ব্ল্যাকহেডস দূর করতে: 
২ চা চামচ দই এবং ২ চা চামচ কমলার খোসার গুঁড়া একটি ডিমের সাদা অংশের সাথে মিশিয়ে পেস্ট করে নিন। যেসব স্থানে ব্ল্যাকহেডস হয়েছে সেখানে লাগিয়ে হালকা ম্যাসাজ করুন। ১৫ মিনিট পর হালকা ম্যাসাজ করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে ব্যবহার করলে ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে সমস্যা কমে যাবে।
* ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি: 
কমলার খোসা বাটা ১ টেবিল চামচ, ১/২ টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়া, ১/২ টেবিল চামচ মধু এবং ১/২ চা চামচ জয়ফলের গুঁড়া নিয়ে পেস্ট বানানি মুখে লাগান। ২০মিনিট রেখে হালকা ম্যাসাজ করে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। পরে ময়শ্চারাইজার লাগান।
* জানালা এবং ফ্লোর পরিষ্কারক হিসেবে: 
একটি গ্লাসের জারে কমলার খোসা রেখে তাতে ভিনেগার ঢালুন। এটিকে ঢেকে কয়েক সপ্তাহ ফ্রিজে রেখে দিন। মাঝে মাঝে এটি নেড়ে দিন। পর বের করে ছেঁকে নিয়ে একচি স্প্রে বোতলে ঢালুন। জানালা ও ফ্লোর পরিষ্কারক হিসেবে এটি ব্যবহার করতে পারেন।

No comments:

Powered by Blogger.